রবিবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রচ্ছদ » ইসি ও নির্বাচন » সন্ত্রাসীদের চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কায় ইসি
সন্ত্রাসীদের চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কায় ইসি
নিজস্ব প্রতিবেদক
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামিনে বাইরে থাকা চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের তৎপরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে কমিশন।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে এসব কথা জানান নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে উদ্ভূত সার্বিক পরিস্থিতি, সামনে করণীয় ও কৌশল নিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে শরীফ ওসমান হাদির ওপর চোরাগোপ্তা হামলার ঘটনাটি সবাইকে উদ্বিগ্ন করেছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত না বললেও বৈঠকে ঘটনাটির পেছনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে কমিশন অবহিত হয়েছে, যার সঙ্গে নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনের স্বার্থ জড়িত।
সানাউল্লাহ বলেন, আলোচনায় উঠে এসেছে—হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করেছিলেন। তার অতীতে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও অপরাধমূলক রেকর্ড রয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানা গেছে, আগে গ্রেপ্তার হওয়া বহু সন্ত্রাসী বর্তমানে জামিনে মুক্ত হয়ে সমাজে অবস্থান করছে, যা নির্বাচনকালীন নিরাপত্তার জন্য বড় উদ্বেগের বিষয়।
তিনি আরও বলেন, আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে—এই চোরাগোপ্তা হামলা কোনো বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ কি না, নাকি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। যদি বড় পরিকল্পনার অংশ হয়, তবে তা আগেভাগে শনাক্তে কোনো ঘাটতি ছিল কি না, সে বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখা হয়েছে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে দুটি উপজেলায় নির্বাচন অফিসে অগ্নিসংযোগের চেষ্টার ঘটনাও আলোচনায় আসে।
![]()
নির্বাচন কমিশনার জানান, বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল—এ ধরনের হামলার পুনরাবৃত্তি রোধ করা এবং কঠোর হাতে দমন নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, যারা নির্বাচন বানচাল বা ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করবে, তারা ব্যর্থ হবে—এই বার্তাই সব বাহিনী একযোগে দিয়েছে। নির্বাচন সময়মতো হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ দৃঢ়তা দেখাবে।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদারে অধিক সংখ্যক চেকপোস্ট স্থাপন, জামিনে মুক্ত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার, অবৈধ ও হারিয়ে যাওয়া অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান জোরদারের কথা বলা হয়েছে। ‘রেবেল হান্ট’ নামে বিশেষ অভিযান দ্বিতীয় ধাপে শুরু হয়েছে বলেও কমিশনকে জানানো হয়েছে। গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার এবং বিভিন্ন বাহিনীর গোয়েন্দা তথ্য সমন্বয়ের ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সীমান্ত এলাকা, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বিশেষ নজরদারির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সানাউল্লাহ আরও বলেন, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের সতর্ক থাকতে হবে। আপাতদৃষ্টিতে সহযোগী সেজে নাশকতাকারীরা ভেতরে অনুপ্রবেশ করতে পারে—এই ঘটনা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়েও সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব হামলার উদ্দেশ্যই ছিল ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করা। তবে নির্বাচন কমিশন ও সরকার তা ব্যর্থ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। প্রার্থীদের অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান তিনি।
বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনারসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), বিজিবি, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক এবং ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়: #সন্ত্রাসীদের চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কায় ইসি






আইন-শৃঙ্খলা ও আচরণবিধি রক্ষা ইসির প্রধান চ্যালেঞ্জ
হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় সিইসির গভীর উদ্বেগ
আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ যাচাইয়ে ইসির ১০ কর্মকর্তা নিয়োগ
মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা: ইসি সানাউল্লাহ
মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা: ইসি সানাউল্লাহ
নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন ও অভিযোগ যাচাইয়ে ইসির ১০ কর্মকর্তা নিয়োগ
৩০০ আসনে নির্বাচনি অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটি গঠন
সম্ভাব্য প্রার্থীকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় উদ্বিঘ্ন ইসি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি 
