শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২
Swadeshvumi
শুক্রবার ● ১৭ অক্টোবর ২০২৫
প্রচ্ছদ » জাতীয় » জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায় যা আছে
প্রচ্ছদ » জাতীয় » জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায় যা আছে
৩ বার পঠিত
শুক্রবার ● ১৭ অক্টোবর ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায় যা আছে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

---

গণমাধ্যমের হাতে আসা জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায় দেখা গেছে, ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেওয়া’ –এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে এটি শুরু হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জনগণের অধিকার ফিরে পাওয়া এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য যে দীর্ঘ সংগ্রাম চলেছে, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান সেই লড়াইয়ের ঐতিহাসিক মোড়।

এতে উল্লেখ করা হয়, হাজারো মানুষের জীবনদান ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত সুযোগে প্রণিত জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।

অঙ্গীকারনামায় বলা হয়েছে, জনগণ যেহেতু রাষ্ট্রের মালিক, তাদের অভিপ্রায়ই সর্বোচ্চ আইন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিকতায় রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে এই সনদ গ্রহণ করেছে। তাই সনদটি সংবিধানে তফসিল হিসেবে বা উপযুক্তভাবে সংযুক্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

অঙ্গীকারনামার ৩য় দফায় বলা হয়েছে, জুলাই জাতীয় সনদের বৈধতা বা প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা হবে না। বরং এর প্রতিটি ধাপে আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।

চতুর্থ অঙ্গীকার হিসেবে উল্লেখ করা হয়, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের জন্য জনগণের ১৬ বছরের সংগ্রাম এবং বিশেষত ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করা হবে।

অঙ্গীকারনামার পঞ্চম দফায় বলা হয়েছে, গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করা হবে। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানকালে নিহতদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া, শহীদ পরিবারের সহায়তা এবং আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

ষষ্ঠ দফায় সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ কাঠামো ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থার সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। এসব বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় আইন, বিধি ও প্রবিধি সংশোধন বা নতুনভাবে প্রণয়ন করার অঙ্গীকার করা হয়েছে।

শেষ দফায় উল্লেখ করা হয়, জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত যেসব সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য, অন্তর্র্বতীকালীন সরকার সেগুলো দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করবে– কোনো প্রকার বিলম্ব ছাড়াই।

জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর ভিত্তি হলো ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান, যা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে বিবেচিত। ওই সময়ে হাজার হাজার নাগরিক স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দুঃশাসন, রাষ্ট্রীয় দমন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থা ও সামাজিক অন্যায়-বঞ্চনার প্রতিবাদে সড়কে নেমেছিলেন। সেই আন্দোলনের সহস্রাধিক মানুষ নিহত এবং ২০ হাজারের অধিক মানুষ আহত ও পঙ্গুত্ববরণ করেন। এমনকি একপর্যায়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়।

প্রসঙ্গত, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার রক্ষা এবং রাষ্ট্রীয় সংস্কারের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ঐতিহাসিক ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামাতে স্বাক্ষর করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতারা। আজ শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সনদে স্বাক্ষর করা হয়, যা ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে জনগণের ত্যাগ ও রক্তদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রণীত নতুন রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল হিসেবে গণ্য হচ্ছে। এতে সাতটি মূল অঙ্গীকারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় পুনর্গঠনের রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে।






আর্কাইভ