শিরোনাম:
ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
Swadeshvumi
মঙ্গলবার ● ১১ জুন ২০২৪
প্রচ্ছদ » জাতীয় » রাজনৈতিক সংকট নিরসন প্রশ্নে সংলাপ-সমঝোতার আহ্বান
প্রচ্ছদ » জাতীয় » রাজনৈতিক সংকট নিরসন প্রশ্নে সংলাপ-সমঝোতার আহ্বান
৭৮ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ১১ জুন ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

রাজনৈতিক সংকট নিরসন প্রশ্নে সংলাপ-সমঝোতার আহ্বান

আরএফইডি টক’-এ সিইসি

 

---

 

# পাঁচ ধাপে উপজেলায় নির্বাচনে ভোটের গড় হার ৩৬.৫৬ শতাংশ 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

 

নির্বাচন নিয়ে দেশে এখনো যে রাজনৈতিক সংকট বিরাজ করছে তা আগামী একশ’ ধরে বছর চলবে- এমন তো হতে পারে না! এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। জাতীয় স্বার্থে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনের মৌলিক প্রশ্নে দলগুলোকে সংলাপ ও সমঝোতার আহ্বান জানান তিনি। রাজনৈতিক সংকটের কারণে দেশের বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি বিগত জাতীয় ও উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় ভোটের মাঠে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এবং সেগুলো অংশগ্রহণমূলক হয়নি বলেও মনে করেন সিইসি। 

 

নির্বাচন কমিশনের সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) আয়োজিত ‘আরএফইডি টক’- অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এসব কথা বলেন। গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁয়ের নির্বাচন ভবনে এই প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

 

আরএফইডির সভাপতি একরামুল হক সায়েমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ূন কবীর। উপস্থিত ছিলেন ইসি সচিব শফিউল আজিম, অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ও জনসংযোগ পরিচালক মো. শরিফুল আলম।

 

---

 

সিইসি বলেন, রাজনৈতিক সংকট দেশের নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলতে পারে। তাই নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার এবং রাজনৈতিকদলগুলোর মধ্যে কতিপয় মৌলিক সমঝোতা প্রয়োজন। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পাঁচ মাস পার হয়ে গেলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধের জমাট বরফ এখনো গলেনি। সার্বিক পরিবেশ এখনো পুরোপুরি অনুকূলে হয়ে ওঠেনি। তবুও আমি আশাবাদী সংকট নিরসন হবে। দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংকট নিয়ে সিইসির বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকেই সংলাপের মধ্য দিয়ে এর সমাধান করতে হবে। পরাজয় মেনে নিয়ে বিজয়ী দলকে অভিন্দন জানানোর মাধ্যমে একটি সুস্থ্য নির্বাচনি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। আর যারা নির্বাচিত হবেন তারা সেবার মনোভাব নিয়ে জনগণের কাছে গেলে সংস্কৃতিতে বড় ধরনের একটি পরিবর্তন হবে।

 

বিগত নির্বাচনগুলোতে ভোটার উপস্থিতি কমে যাওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইন ও বিধিবিধান প্রয়োগ করে। যারা প্রার্থী তাদের দক্ষতা ও জনসম্পৃক্ততার উপর নির্ভর করে ভোটার উপস্থিতি কেমন হবে। একটি বড় রাজনৈতিক দলের ভোটে না থাকায় অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হয়নি। আমরা সব নির্বচনই নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের চেষ্টা করেছি। তারপরও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করা সম্ভব হয়নি। একটি বড় বাজনৈতিক দল নির্বাচন করার কারণে এমন হয়েছে। তাতে আমাদের কোন হাত ছিলো না, সেটা রাজনৈতিক সংকট। সংস্থার প্রধান হিসেবে সরকারের কোন হস্তক্ষেপ নির্বাচনের সময় আমি পাইনি। আমরা কোন অসততা ও পক্ষপাতমূলক আচরণও করিনি। সেই বিবেচনায় জনগণের আস্থা হওয়া উচিত।

 

এনআইডি জালিয়াতি প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, এনআইডি একটি জটিল প্রযুক্তিগত দিক। এই প্রযুক্তির কোনো ফাঁকফোকর থাকতে পারে। ফলে কেউ কেউ এই সিস্টেমটাকে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের কাজে ব্যবহার করে থাকতে পারেন। সেটা কিছু মানুষের অসাধুতায় হতে পারে। কেউ যদি ঘুষ নিয়ে তা করে থাকে, সেটাও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে। দুটো কমিটি করা হয়েছে। অতীতেও কিছু লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

 

---

 

নির্বাচনি আইন প্রশ্নে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য এক শতাংশ ভোটার তালিকা দেয়ার নিয়ম তুলে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে জাতীয় নির্বাচনেও এটা তুলে দেয়ার বিষয়ে তারা পরামর্শ দেবেন। 

 

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে মূল্যায় জানতে চাইলে সিইসি বলেন, এবারের উপজেলা নির্বাচন করার কথা থাকলেও ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে পাঁচ ধাপে শেষ করতে হয়েছে। শেষ ধাপে ভোট পড়েছে ৪২ শতাংশের মতো। দেশের ৪৯৫ উপজেলার মধ্যে পাঁচ ধাপে ৪৬৯ টিতে নির্বাচন শেষ হয়েছে। এবার প্রতিটি জেলায় তিনটি বা চারটি ধাপে ভোট হয়েছে। এজন্য প্রশাসনে কর্মকর্তাদের জন্য সহজ হয়েছে। স্বস্তিদায়ক হয়েছে। আইনি জটিলতা ও মেয়াদ পূর্তি না হওয়ায় অবশিষ্ট উপজেলাগুলোর নির্বাচন পরে হবে।

 

গত ৮ মে অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত ১৩৯টি উপজেলা নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলায় ভোট পড়েছে ৩৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। তৃতীয় ধাপে ২৯ মে ৮৭ উপজেলা নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৩৬ দশমিক ২৪ শতাংশ। চতুর্থ ধাপে গত ৫ জুন অনুষ্ঠিত ৬০ উপজেলা নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৩৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ। সব মিলিয়ে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট পড়ার হার দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

 

প্রথমবারের মতো স্থানীয় এই নির্বাচন দলীয়ভাবে হয় ২০১৯ সালে। সে বছর ১০ মার্চ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত পাঁচ ধাপে ৪৫৫ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ৬ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু ভোট দিয়েছেন ২ কোটি ৫৭ লাখ ৩৯ হাজার ৭৮৮জন ভোটার, যা মোট ভোটের ৪০ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

 

 



বিষয়: #



আর্কাইভ