শিরোনাম:
ঢাকা, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রহায়ন ১৪৩২
Swadeshvumi
মঙ্গলবার ● ১৮ নভেম্বর ২০২৫
প্রচ্ছদ » ইসি ও নির্বাচন » চালু হলো ইসির ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ
প্রচ্ছদ » ইসি ও নির্বাচন » চালু হলো ইসির ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ
৫ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ১৮ নভেম্বর ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

চালু হলো ইসির ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

---

দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকারের ক্ষেত্র উন্মুক্ত করতে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন অ্যাপটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।

এসময় চার নির্বাচন কমিশনার, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, কূটনীতিক, আইটি বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতিবিদরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানেই মিশর, জাপান ও কেনিয়ায় থাকা কয়েকজন প্রবাসী পরীক্ষামূলকভাবে নিবন্ধনও সম্পন্ন করেন।

জানা যায়, প্রবাসী ও দেশে বসবাসরত বিভিন্ন গোষ্ঠীর ডাকযোগে ভোট দেওয়ার জন্য এই অ্যাপে নিবন্ধন চলবে আগামী ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এক্ষেত্রে প্রতিটি অঞ্চলে ৫ দিন করে সময় রাখা হয়েছে।

এ সময় অনুষ্ঠানে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘গণতন্ত্রের ইতিহাসে এই অ্যাপের উদ্বোধন এক অনন্য সংযোজন।’ তার মতে, দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী নাগরিকরা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এই উদ্যোগ সেই বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে বড় ভূমিকা রাখবে। তিনি জানান, মাত্র তিন মাসে পোস্টাল ভোট ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় আইটি–সাপোর্টেড এই অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে, যা ইসির জন্য এক ধরনের দুঃসাহসিক কাজ ছিল।

সিইসি ব্যাখ্যা করেন, এই অ্যাপটি একটি হাইব্রিড মডেল, যেখানে নিবন্ধন সম্পূর্ণ অনলাইন হলেও ভোটদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে ম্যানুয়ালভাবে। নিবন্ধনের পর ভোটারের ঠিকানায় ব্যালট পেপার পাঠানো হবে এবং প্রার্থী তালিকা অ্যাপে দেখে ভোটার পছন্দের প্রার্থীর প্রতীকে টিক চিহ্ন দিয়ে ডাকযোগে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ব্যালট ফেরত পাঠাতে পারবেন। ভোটের দিন এসব ব্যালট সংরক্ষিত কোষাগার থেকে বের করে গণনা করা হবে।

সিইসি তা বলেন, ‘অ্যাপটি চালুর ফলে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুললেও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা, মানুষের আস্থা তৈরি এবং প্রযুক্তিগত ত্রুটি মোকাবিলা করা গুরুত্বপূর্ণ। অ্যাপ ব্যবহারের সময় কোনো সমস্যা পেলে আমাদের জানাতে হবে। সবাই মিলে এটিকে আরও উন্নত করে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যেতে হবে।’

ইসি আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান, প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংখ্যা ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি হতে পারে, যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭-৮ শতাংশ। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রবাসীদের নিবন্ধনে উৎসাহিত করার আহ্বান জানান।

প্রবাসীদের অঞ্চলভিত্তিক নিবন্ধনের সময়সূচি

ইসি জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী অঞ্চলভিত্তিক ৫ দিন করে ধাপে ধাপে প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধন গ্রহণ করা হবে।

১৯-২৩ নভেম্বর: পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার মোট ৫০টি দেশের প্রবাসী।

২৪-২৮ নভেম্বর: উত্তর আমেরিকার ১৪ দেশ ও ওশেনিয়ার ২ দেশ।

২৯ নভেম্বর- ৩ ডিসেম্বর: ইউরোপের ৪২ দেশ।

৪-৮ ডিসেম্বর: সৌদি আরব।

৯-১৩ ডিসেম্বর: দক্ষিণ এশিয়ার ৭ দেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১ দেশ।

১৪-১৮ ডিসেম্বর: মধ্যপ্রাচ্যের (সৌদি বাদে) ১৪ দেশ।

১৯-২৩ ডিসেম্বর: বাংলাদেশে বসবাসরত (ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নিজ এলাকায় উপস্থিত থাকতে না পারা সরকারি চাকরিজীবী, কয়েদি ও অন্যান্য দেশে বসবাসরত ভোটাররা নিবন্ধন করতে পারবে। এছাড়া প্রয়োজনে প্রবাসীদের মধ্যে নির্ধারিত সময়ে কোন কারণে নিবন্ধন থেকে বাদ পড়া ব্যক্তদেরও এ সময়ে নিবন্ধন করার সুযোগ দেওয়া হবে।

নিবন্ধন ও ব্যালট পাঠানোর প্রক্রিয়া

অ্যাপে নিবন্ধনের পর রিটার্নিং কর্মকর্তারা পৃথক ভোটার তালিকা তৈরি করবেন। তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় ব্যালট পেপার পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ভোটাররা অ্যাপের মাধ্যমে প্রার্থী তালিকা দেখে প্রতীকের ওপর টিক দিয়ে ডাকযোগে ভোট পাঠানোর সুযোগ পাবেন। ব্যালট পরিবহন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসি পোস্টাল সার্ভিসের সঙ্গে সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

ইসি প্রাথমিকভাবে ২০ লাখ ব্যালট পেপার ছাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১৪৩টি দেশে অন্তত ৫০ লাখের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী ব্যালট পেপারের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো পোস্টাল ব্যালটে প্রার্থীর নাম থাকবে না, শুধু প্রতীক থাকবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনের পূর্বপ্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রবাসী ভোটারদের যুক্ত করা ইসির অন্যতম বড় উদ্যোগ। ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ চালুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো প্রবাসী ভোটারদের আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় নির্বাচনের মূলপ্রবাহে যুক্ত করল, যা দেশের গণতান্ত্রিক






আর্কাইভ