শিরোনাম:
ঢাকা, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২
Swadeshvumi
বুধবার ● ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রচ্ছদ » প্রধান সংবাদ » তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন: প্রত্যাশা, দায়িত্ব ও গণতান্ত্রিক সম্ভাবনা
প্রচ্ছদ » প্রধান সংবাদ » তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন: প্রত্যাশা, দায়িত্ব ও গণতান্ত্রিক সম্ভাবনা
৮৩ বার পঠিত
বুধবার ● ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন: প্রত্যাশা, দায়িত্ব ও গণতান্ত্রিক সম্ভাবনা

মো: নূর-ই সাইফুল্লাহ

মো: নূর-ই সাইফুল্লাহ 

বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের সূচনা হতে যাচ্ছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনের মাধ্য দিয়ে। দীর্ঘ সময় দেশের বাইরে অবস্থানের পর তাঁর আগমন কেবল একটি দলের রাজনৈতিক কর্মসূচির বিষয় নয়; বরং সামগ্রিক রাজনৈতিক গতিপথে নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত বহন করছে।

তারেক রহমানকে ঘিরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ও আবেগ থাকাই স্বাভাবিক। তবে এই প্রত্যাবর্তন নিয়ে সাধারণ জনগণের মধ্যেও একটি স্পষ্ট প্রত্যাশা রয়েছে। রাজনীতিতে ভারসাম্য ফিরবে, বিরোধী রাজনীতি আরও দায়িত্বশীল হবে এবং গণতান্ত্রিক চর্চা নতুন করে গতি পাবে। দীর্ঘদিন ধরে অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির সংকট যে আস্থাহীনতা তৈরি করেছে, তা কাটিয়ে ওঠার সুযোগ হিসেবেও অনেকে এই মুহূর্তকে দেখছেন।

যদিও দায়িত্বের বিষয়টি এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতা এখন অত্যন্ত সংবেদনশীল। নির্বাচন ব্যবস্থা, আইনের শাসন, মানবাধিকার ও অর্থনৈতিক চাপ—সব মিলিয়ে রাষ্ট্র একটি কঠিন সময় পার করছে। এই প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে দলীয় রাজনীতির সীমা অতিক্রম করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করা। সহনশীলতা, সংলাপ ও গণতান্ত্রিক আচরণই হতে পারে তাঁর নেতৃত্বের মূল মানদণ্ড।

তারেক রহমানের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো তাঁর দূরদর্শিতা ও সংগঠনিক চিন্তাশক্তি। সময়ের পরিবর্তিত বাস্তবতা অনুধাবন করে তিনি বরাবরই দলকে আধুনিক ও কাঠামোগতভাবে শক্তিশালী করার কথা বলেছেন। তরুণ নেতৃত্বকে সামনে আনা, তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনকে সক্রিয় রাখা এবং আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থার মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে সংযোগ জোরদার করার চিন্তাভাবনা তাঁকে একজন ভবিষ্যতমুখী রাজনৈতিক নেতা হিসেবে চিহ্নিত করে।

দীর্ঘদিনের প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার সক্ষমতা তাঁর নেতৃত্বগুণের পরিচয় বহন করে। প্রতিহিংসার রাজনীতির পরিবর্তে রাজনৈতিক সমাধান, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পথের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার অবস্থান একটি পরিণত রাজনৈতিক মানসিকতারই প্রতিফলন।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই নির্বাচন কতটা অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য হবে, তা নির্ভর করবে সব রাজনৈতিক শক্তির দায়িত্বশীল আচরণের ওপর। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি যদি একটি সুস্পষ্ট, বাস্তবভিত্তিক ও ইতিবাচক রাজনৈতিক রোডম্যাপ তুলে ধরতে পারে, তবে জনগণের আস্থা পুনর্গঠনের একটি বাস্তব সুযোগ তৈরি হতে পারে।

এদিকে, নির্বাচন-পরবর্তী সময়ও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। ফলাফল যাই হোক, দেশের স্থিতিশীলতা, সামাজিক ঐক্য ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য পরিণত রাজনৈতিক আচরণ অপরিহার্য। সংঘাত নয়, বরং সংলাপ ও সমঝোতার পথেই জাতির কল্যাণ নিহিত।

সবশেষে বলা যায়, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন কেবল একটি ব্যক্তিগত ঘটনা নয়; এটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি সম্ভাবনার নাম। সেই সম্ভাবনা কতটা বাস্তবে রূপ নেবে, তা নির্ভর করবে নেতৃত্বের প্রজ্ঞা, দায়িত্ববোধ এবং জনগণের প্রত্যাশাকে কতটা গুরুত্বের সঙ্গে ধারণ করা যায়—তার ওপরই।

লেখক: পরিচালক (গ্রুপ প্রশাসন), আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ



বিষয়: #



আর্কাইভ