সোমবার ● ৮ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রচ্ছদ » অপরাধ » মা–মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশাকে খুঁজছে পুলিশ
মা–মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশাকে খুঁজছে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা–মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করার ঘটনার পর সমগ্র এলাকায় নেমে এসেছে শোক ও আতঙ্কের ছায়া। শাহজাহান রোডের একটি বাসা থেকে লায়লা আফরোজ (৪৮) এবং তাঁর নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে নাফিজা লাওয়ালের (১৫) রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পরপরই তদন্তে নতুন দিক উন্মোচিত হয় সিসিটিভি ফুটেজে। ওই ফুটেজেই সামনে আসে সম্ভাব্য প্রধান অভিযুক্ত— নবনিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা।
রহস্য ঘনীভূত: কালো বোরকা পরে ঢোকেন, বের হন স্কুল ড্রেসে
সোমবার সকাল ৭টা ৫২ মিনিটে ভবনের সিসিটিভিতে দেখা যায়, কালো বোরকা পরিহিত অবস্থায় বাসায় ঢুকছেন আয়েশা। কিন্তু মাত্র দেড় ঘণ্টা পর, ৯টা ৩৬ মিনিটে তাঁকে দেখা যায় সাদা স্কুলের পোশাক পরে দ্রুত বের হয়ে যেতে। পোশাক বদলের এই অস্বাভাবিকতা এবং হত্যাকাণ্ডের সময়সীমা মিলিয়ে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে—এই পোশাক পরিবর্তন ছিল হত্যার আলামত গোপন করারই অংশ।
![]()
লায়লার স্বামীর বর্ণনা: ঘরের মেঝে ও দেয়ালজুড়ে রক্ত
নিহত লায়লা আফরোজের স্বামী এম জেড আজিজুল ইসলাম, যিনি উত্তরা সানবিমস স্কুলের শিক্ষক, বেলা ১১টার পর বাসায় ঢুকে স্ত্রীর ও মেয়ের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি জানান, ঘরের মেঝে ও দেয়ালজুড়ে রক্ত ছড়িয়ে ছিল। এর আগেই আহত অবস্থায় নাফিজাকে হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত নাফিজার পরীক্ষা সেদিনই শেষ হওয়ার কথা
লায়লা আফরোজের মেয়ে নিহত নাফিজা পড়তেন মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলে। সোমবার ছিল তার বার্ষিক পরীক্ষার শেষ দিন। কিন্তু তার আগেই নিষ্ঠুরভাবে শেষ হয়ে যায় এক কিশোরীর জীবন।
গৃহকর্মীর অল্প পরিচয় নিয়েও রহস্য
পরিবার জানায়, মাত্র চার দিন আগে কাজের সন্ধানে বোরকা পরিহিত এক মেয়ে ভবনের গেটে আসে। দারোয়ানের মাধ্যমে পরিচয় হয় লায়লা আফরোজের সঙ্গে। কথাবার্তায় তিনি নিজের নাম জানান ‘আয়েশা’, বয়স আনুমানিক ২০ বছর। বলেন, রংপুর তাঁর বাড়ি, বাবা–মা আগুনে পুড়ে মারা গেছে, তিনি জেনেভা ক্যাম্পে চাচা–চাচির সঙ্গে থাকেন— এমনই পরিচয় দিয়ে কাজ পেয়ে যান। তার শরীরে পোড়া ক্ষতের দাগও ছিল। প্রথম দুই দিন কাজেও ঠিকঠাকই এসেছিলেন তিনি। এরপর হঠাৎই ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা।
হত্যার অস্ত্র উদ্ধার, তদন্ত চলছে
তেজগাঁও জোনের ডিসি ইবনে মিজান জানান, সিসিটিভির ফুটেজ ও ঘটনাস্থলের আলামত বিশ্লেষণ করে দ্রুতই হত্যাকারীকে শনাক্ত করা হবে। ইতোমধ্যে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটিও উদ্ধার হয়েছে। আয়েশাকে সন্দেহভাজন হিসেবে খুঁজছে পুলিশ। তবে তাঁর বিস্তারিত পরিচয় পরিবার জানে না, যা অনুসন্ধানকে কিছুটা জটিল করে তুলেছে।
![]()
একটি পরিবারের নিরাপত্তা ভেঙে চুরমার
মাত্র চার দিনের পরিচয়, অস্পষ্ট অতীত, পোশাক বদলে পালিয়ে যাওয়া— সব মিলিয়ে আয়েশার গতিবিধি তদন্তের কেন্দ্রে। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত ছিল কি না বা অন্য কেউ এতে জড়িত ছিল কি না— এসব বিষয়ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মোহাম্মদপুরের এই মা–মেয়ের হত্যাকাণ্ড রাজধানীতে তৈরি করেছে নতুন আতঙ্কের আবহ। নিরাপত্তা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক যে কতটা ভঙ্গুর হতে পারে, এই ঘটনা যেন তারই এক বেদনাদায়ক প্রমাণ।
বিষয়: ## মা–মেয়ে খুন # অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা # খুঁজছে পুলিশ





মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক
বিএসএফের গুলিতে নিহত শহিদুলের লাশ ফেরত
কুড়িগ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ নিহত ৩
৫ কোটি টাকার বিনিময়ে প্রধান প্রকৌশলী হলেন আব্দুল আউয়াল
মানবতাবিরোধী অপরাধ: শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁনের মৃত্যুদণ্ড
ড্রামে খণ্ডিত লাশ: হত্যাকাণ্ডের কারণ নিয়ে ভিন্ন তথ্য র্যাব ও পুলিশের
ড্রামে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা
শাহজাহানপুরে ভাড়া বাসায় বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
ইনুর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ ২ নভেম্বর 
