শিরোনাম:
ঢাকা, বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯ অগ্রহায়ন ১৪৩২
Swadeshvumi
বুধবার ● ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রচ্ছদ » প্রধান সংবাদ » অডিও বিতর্কে উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন, ইসলামী ব্যাংক ও জামায়াতকে ঘিরে নতুন বিতর্ক
প্রচ্ছদ » প্রধান সংবাদ » অডিও বিতর্কে উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন, ইসলামী ব্যাংক ও জামায়াতকে ঘিরে নতুন বিতর্ক
১ বার পঠিত
বুধবার ● ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

অডিও বিতর্কে উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন, ইসলামী ব্যাংক ও জামায়াতকে ঘিরে নতুন বিতর্ক

শায়লা শবনম

---

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের এক পরিচালক, কিছু কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের এক নেতার কথিত কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ প্রচারের দাবি ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গন আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে। অডিওটির সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই হয়নি, তবে দাবি প্রকাশের পরই তা নির্বাচনের আগে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

কী রয়েছে বিতর্কের কেন্দ্রে

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দাবিগুলোর মূল বক্তব্য একটি অনলাইন বৈঠকে ইসলামী ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা এবং জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের এক নেতার মধ্যে সম্ভাব্য “ভোটকেন্দ্রসংক্রান্ত দায়িত্ব” নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।

এই দাবি প্রকাশের পর বিষয়টি দ্রুত রাজনৈতিক বিতর্কে রূপ নেয়।

তবে, ইসলামী ব্যাংক, জামায়াত বা নির্বাচন কমিশন এ পর্যন্ত কেউই অডিওর বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি।

ইসলামী ব্যাংক-জামায়াত সংযোগ: পুরোনো প্রশ্ন আবার সামনে

বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংক ও জামায়াতে ইসলামের সম্ভাব্য সম্পর্ক এই প্রশ্ন বহু বছর ধরে রাজনৈতিক আলোচনায় রয়েছে।  তবে জামায়াত সব সময়ই যেকোনো সাংগঠনিক বা প্রশাসনিক সম্পর্ক অস্বীকার করেছে।

২০২৫ সালের ২৮ অক্টোবর দলটির মহাসচিব মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামের “কোনো সাংগঠনিক বা প্রশাসনিক সম্পর্ক নেই।”

তা সত্ত্বেও নতুন অডিও বিতর্ক পুরোনো প্রশ্নকেই আবার সামনে নিয়ে এসেছে।

বিএনপির অভিযোগের প্রেক্ষাপট

২৩ অক্টোবর বিএনপি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে দাবি করে—ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকসহ কিছু ইসলামী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারেন, তাই তাদের ভোটের দায়িত্বে রাখা উচিত নয়।

এই প্রেক্ষাপটে নতুন অডিও বিতর্ক বিএনপির সেই বক্তব্যকে আরও আলোচনায় নিয়ে এসেছে।

কে এই মো. আব্দুল জলিল?

যার নাম নতুন বিতর্কের দাবিতে উঠে এসেছে—তিনি ইসলামী ব্যাংকের ইন্ডিপেনডেন্ট ডিরেক্টর মো. আব্দুল জলিল।

তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মজীবন শুরু করেন ১৯৮৩ সালে, পরে দীর্ঘ সময় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০১৭ সালে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে অবসর নেন।

ব্যাংকিং, বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও অফশোর ব্যাংকিং—এই ক্ষেত্রগুলোতে তিনি অভিজ্ঞ হিসেবে পরিচিত।

সংশ্লিষ্টদের নীরবতা ও জনমানসের প্রতিক্রিয়া

অডিও সম্পর্কিত দাবির পর জনমনে প্রশ্ন বাড়ছে—

অডিওটি আসল কি না?

হয়ে থাকলে এর উদ্দেশ্য কী?

এবং এর সঙ্গে ব্যাংক, রাজনৈতিক দল বা কর্মকর্তাদের কোনো আনুষ্ঠানিক সংশ্লিষ্টতা আছে কি না?

যেহেতু কোনো পক্ষই আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তাই বিতর্ক আরও বিস্তৃত হচ্ছে।

নির্বাচনের আগে আস্থার সংকট বাড়তে পারে

অযাচাইকৃত হলেও এ ধরনের দাবি ভোটারদের মধ্যে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াতে পারে।

দলগুলোও এ ধরনের বিতর্ককে নিজেদের রাজনৈতিক বক্তব্য জোরদার করতে ব্যবহার করতে পারে।

বিএনপি ও জামায়াতকে নিয়ে নতুন বিতর্ক

বিএনপি আগেই ইসলামী ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার রাজনৈতিক পক্ষপাত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।

এখন অডিও বিতর্ক সেই কথোপকথনকে আরও আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছে এবং জামায়াতকেও নতুন করে ব্যাখ্যা দিতে হতে পারে।

ইসলামী ব্যাংকের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন

দেশের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে ইসলামী ব্যাংকের ওপর যেকোনো রাজনৈতিক বিতর্ক সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে—

গ্রাহক আস্থা

নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারি

আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা

এসব ক্ষেত্রেই এর প্রভাব পড়তে পারে।

তদন্ত বা ব্যাখ্যার জোরালো দাবি

বিতর্ক বড় হলে নির্বাচন কমিশন বা অন্যান্য দায়িত্বশীল সংস্থার কাছে বিষয়টি স্পষ্ট করার দাবি বাড়বে। যেকোনো তদন্ত বা ব্যাখ্যা রাজনৈতিক সমীকরণেও নতুন পরিবর্তন আনতে পারে।

অডিও ফাঁস-সংক্রান্ত দাবি এখনো অযাচাইকৃত, কিন্তু তবুও এটি নির্বাচনের আগে বাংলাদেশি রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ যোগ করেছে। ইসলামী ব্যাংক, জামায়াত ও বিএনপি—তিন পক্ষকেই কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া এই আলোচনার ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণ নির্ভর করছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এবং সম্ভাব্য তদন্তের ওপর। নির্বাচনের আগমুহূর্তে এমন যেকোনো তথ্য—সত্য হোক বা দাবি রাজনৈতিক পরিবেশে স্পষ্ট প্রভাব ফেলতে বাধ্য।






আর্কাইভ