শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২
Swadeshvumi
মঙ্গলবার ● ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রচ্ছদ » অপরাধ » নোয়াখালীতে চর দখল নিয়ে দুই পক্ষের গোলাগুলি, নিহত ৫
প্রচ্ছদ » অপরাধ » নোয়াখালীতে চর দখল নিয়ে দুই পক্ষের গোলাগুলি, নিহত ৫
৩ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

নোয়াখালীতে চর দখল নিয়ে দুই পক্ষের গোলাগুলি, নিহত ৫

নোয়াখালী প্রতিনিধি

---

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জাগলার চরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলিতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ৮ থেকে ১০ জন আহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ একজন নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারলেও অপর চারজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী জাগলার চর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে একজন হলেন আলাউদ্দিন (৪০)। তিনি সুখচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চর আমান উল্যাহ গ্রামের ছেরাং বাড়ির মহিউদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জাগলার চরের জমি এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কাউকে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। এ সুযোগে গত ৫ আগস্টের পর জাহাজমারা ইউনিয়নের কোপা সামছু বাহিনী ওই চরের বেশ কিছু জমি বিক্রি করে। পরে সুখচর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন বাহিনী ওই জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে আলাউদ্দিন বাহিনী আরও বেশি দামে কিছু জমি বিক্রি করে। উভয় পক্ষ আলাদাভাবে চরের জমি বিক্রির চেষ্টা চালাতে থাকে।

অভিযোগ রয়েছে, চর দখলের সঙ্গে যুক্ত ডাকাত আলাউদ্দিনের সঙ্গে সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিম, আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম মেম্বার ও বিএনপি নেতা নবীর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। তাদের সহযোগিতায় কোপা সামছু বাহিনীকে চর থেকে বিতাড়িত করে জমির দখল নিতে আলাউদ্দিন বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করা হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার বিরোধ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে কোপা সামছু ও আলাউদ্দিন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে বন্দুকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এতে প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে আলাউদ্দিনসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে আলাউদ্দিনকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর চারজনের মরদেহ ঘটনাস্থলেই পড়ে ছিল।

স্থানীয়দের ধারণা, জাগলার চরে সংঘর্ষে তিন বাহিনী— ফরিদ কমান্ডার, শামসু বাহিনী এবং আলাউদ্দিন বাহিনী মুখোমুখি হয়ে গুলি চালিয়েছে। এতে সামসু বাহিনীর প্রধান এবং আলাউদ্দিন বাহিনীর প্রধান আলাউদ্দিন নিহত হয়েছেন। তবে ফরিদ ডাকাত তার বাহিনী নিয়ে পালিয়ে গেছে।

বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে এই চর এলাকায় উশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। সংঘর্ষের সময়ে বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং বাহিনীগুলো এখান থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে জানতে সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

হাতিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে একটি মরদেহ রাখা আছে, চারটি মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্গম চরাঞ্চলের কারণে পুলিশ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।  ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিতভাবে জানা যাবে।






আর্কাইভ