শিরোনাম:
ঢাকা, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২
Swadeshvumi
বুধবার ● ৫ নভেম্বর ২০২৫
প্রচ্ছদ » প্রধান সংবাদ » ইসির রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের ইতিহাস
প্রচ্ছদ » প্রধান সংবাদ » ইসির রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের ইতিহাস
৯ বার পঠিত
বুধবার ● ৫ নভেম্বর ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ইসির রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের ইতিহাস

শায়লা পারভীন

---

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ও বাতিলের মাধ্যমে দেশের নির্বাচনী রাজনীতির মানচিত্র বহুবার পরিবর্তিত হয়েছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও দলীয় প্রতীকে ভোট প্রদানের জন্য রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন অত্যাবশ্যক।

আরপিও অনুযায়ী, নিবন্ধনের জন্য দলের কেন্দ্রীয় কমিটি, অন্তত এক-তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০টি উপজেলার কার্যকর কমিটি থাকতে হবে। প্রতিটি কমিটিতে নূন্যতম ২০০ ভোটারের সমর্থন থাকা আবশ্যক। নিবন্ধন পাওয়া দলের জন্য এটি মানে, তারা ইসির স্বীকৃতি পাবে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে রাজনৈতিক দল হিসেবে সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে।

নিবন্ধন শুরু ও কার্যক্রমের ইতিবৃত্ত

নবম সংসদ নির্বাচনের আগে, ২০০৮ সালে দল নিবন্ধনের প্রথা চালু করে ইসি। তৎকালীন সিইসি এটিএম শামসুল হুদা নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন সর্বাধিক ৩৯টি দলকে নিবন্ধন দেয়, যা তখনকার দেশে সবচেয়ে বড় তালিকা। এরপর দশম সংসদ নির্বাচনের আগে কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ নেতৃত্বাধীন ইসি দুটি দলকে নিবন্ধন দেয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় কে এম নুরুল হুদা নেতৃত্বাধীন কমিশন কোনো নতুন দলকে নিবন্ধন না দিলেও আদালতের আদেশে কিছু দল পরে নিবন্ধন তালিকায় যুক্ত হয়।

গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের সময় আবেদন করেছিল ৯৩টি দল। প্রাথমিক কাগজপত্র বাছাইয়েই বাদ পড়ে নামসর্বস্ব ৮১টি দলের আবেদন। পরে দুটি দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) নিবন্ধন পায়। অভিযোগ আছে, সে দুটিও ছিল ভুঁইফোড় দল। ইসির এই সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনা হয়।

নিবন্ধন বাতিলের নজিরও কম নয়। ২০০৯ সালে ফ্রিডম পার্টি শর্তসাপেক্ষে নিবন্ধন পেয়েছিল, তবে স্থায়ী সংশোধিত গঠনতন্ত্র দিতে না পারায় নবম সংসদ নির্বাচনের সময় এর নিবন্ধন বাতিল হয়। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীকে আদালতের রায়ে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ইসির গেজেটে জানানো হয়, জামায়াতের নিবন্ধন আরপিও অনুযায়ী বাতিল হয়েছে। ২০১৭ সালে নিবন্ধিত দলগুলোর কমিটি ও অফিসের তথ্য যাচাইয়ের সময় শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় পিডিপি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন ও জাগপা’র নিবন্ধন বাতিল করা হয়।

কোনো দলকে দলীয় প্রতীকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে হলে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হতে হয়। এ নিবন্ধন পেতে কিছু শর্ত পূরণ করার বিধান আছে। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্র্বতী সরকারের গঠন করা নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন এসব শর্ত কিছুটা সহজ করার সুপারিশ করেছে। তবে সে সুপারিশ এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। বিদ্যমান আইনে অর্থাৎ আগের শর্তেই নিবন্ধনের আবেদন চেয়েছে ইসি।

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন নতুন দলগুলোর নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করে। সেই সময় এবি পার্টি, নুরুল হক নূরের গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), মাহমুদুর রহমানের নাগরিক ঐক্য ও গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দেয়। পরবর্তীতে আদালতের আদেশে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বিএমজেপি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি) নিবন্ধিত হয়।

ইসির নিবন্ধিত দল দাঁড়ালো ৫৩

বর্তমানে দেশে মোট ৫৩টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন তিনটি নতুন দলকে নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে। সেগুলো হলো- জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) ও বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি। সর্বশেষ আদালতের আদেশে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপার) নিবন্ধন পুনর্বহাল হয়। এর বাইরে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত, ফ্রিডম পার্টি, পিডিপি ও ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলনের নিবন্ধন বাতিল রয়েছে।

উল্লেখ্য, সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যুদ্ধাপরাধের দায়ে আগে বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামী দলটি চলতি বছর পুনরায় ইসির নিবন্ধন পায়। অন্যদিকে অন্তর্র্বতী সরকার মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করে।






আর্কাইভ